ভ্রমণের পূর্বে যে ৭টি টিপস আপনার জানা প্রয়োজন। আমরা সবাই কম বেশি ভ্রমণ প্রিয়। ভ্রমণ করতে কার না ভালো লাগে বলেন! তবে, ভ্রমণের পূর্বে আমাদের কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখা প্রয়োজন।
ভ্রমণের পূর্বে আপনি কি কি বিষয়ে খেয়াল রাখবেন তা নিয়ে আজকের ভ্রমণ টিপস। চলুন শুরু করা যাক…
আরও: বাংলাদেশের ৬৪ জেলার দর্শনীয় স্থান
ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করে লোকেশন খুঁজুন
ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করে লোকেশন খুঁজে আবার কিভাবে! এই ব্যাপারটা আপনাদের কাছে নতুন, তাই না? তবে এভাবেও আপনি দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জানতে পারেন। টুঁইটার এর মতো ইনস্টাগ্রাম এ ও হ্যাশট্যাগ “#” ব্যাবহার করা হয়।
আপনি হ্যাশট্যাগ “#” ব্যাবহার করে ইনস্টাগ্রামে সার্চ দিলেই চমৎকার দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জানতে পারবেন। তবে কনফিউজড হওয়ার কোন কারন নেই, যে আমি কি লিখে সার্চ দিব! #দর্শনীয়স্থান #দর্শনীয় #বাংলাদেশ #Bangladesh #ভ্রমণ #ট্রাভেল #ট্যুর #Vromon এই টাইপের কমন নাম দিয়ে সার্চ দিবেন।
আশাকরি ভালো রেজাল্ট পাবেন। তবে এই টিপস আপনি অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া যেমন, ফেসবুক, টুঁইটারেও ব্যাবহার করতে পারেন।
এছাড়া নির্দিষ্ট কোন স্থান এর জন্য তো গুগল ম্যাপ রয়েছেই।
স্থানীয় ভাষার সাধারণ বাক্যাংশ শিখুন
এই টিপস টি আপনার ভ্রমণে অনেক বেশি কাজে দিবে। আপনি যদি বাংলাদেশী বা বাংলা ভাষাভাষী মানুষ হন তাহলে বাংলাদেশে ভ্রমণের জন্য বাংলাদেশীদের এই বিষটা খুব একটা দরকার হবে না। তবুও পাহাড়ি অঞ্চল যেমন: চট্রগ্রাম, সিলেট এ সব এলাকায় গেলে তাদের স্থানিয় ভাষা বুজা কিন্তু খুব কঠিন।
তাই তাদের সাথে কথা বলার জন্য প্রয়োজনীয় ছোট-ছোট শব্দ গুলো জেনে রাখলে আপনার অনেক সুবিধা হবে।
এছাড়া বিদেশ ভ্রমনে গেলে তাদের ভাষা না বুজলেও আপনি যদি ছোট খাটো শব্দ গুলো জানেন যেমন: Hi, Hello, Please, Thank you and I’m sorry এগুলো দিয়ে অনেকটা চালিয়ে নিতে পারবেন।
আরও: ভ্রমণে যে ৫টি ইলেক্ট্রনিক্স এক্সেসরিজ সাথে থাকা প্রয়োজন
আপনি যে স্থানটি ভ্রমণ করতে যাচ্ছেন সে স্থান সম্পর্কে ইতিহাস জেনে নিন
সাধারণত আমি বলে থাকি যে, আপনি যে স্থানটি ভ্রমণ করতে চাচ্ছেন সে স্থান সম্পর্কে ইতিহাস জানার জন্য বই পড়তে পারেন। যেমন আপনি রাঙ্গামাটি ভ্রমণে যাবেন। রাঙ্গামাটির ইতিহাস সম্পর্কে অনেক বই রয়েছে। আপনি ভ্রমণে যাবার পূর্বে রাঙ্গামাটি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে যেতে পারেন।
বেশি জ্ঞান কাউকে কষ্ট দেয় না! একটি জায়গা দেখার আগে সে স্থান সম্পর্কে কৌতূহলী হওয়া কেবলমাত্র মানুষেরই কাজ। তাই ভ্রমণের পূর্বে সেই স্থান সম্পর্কে জানার জন্য বই পড়ুন। ভ্রমণ বেশি উপভোগ করতে পারবেন। (প্রমাণিত)
আরিফ হোসেন (GoArif)
ইতিহাস জানা বা বই পড়লে আমার লাভ টা হবে কি? এই বিষয়ে একটা চমৎকার উদাহরন আছে আমার কাছে। আমার মেঝো ভাই (ডাঃ মোয়াজ্জেম হোসেন) আমার থেকে ৩ বছর এর বড়। ভাই যখন ক্লাস ৯ এর পড়তেন তখন তিনি আমাকে একটা পড়া সম্পর্কে টিপস দিয়েছিলেন।
ভাই বলেছিলেন, তোদের ক্লাসে স্যার যখন যে টপিক নিয়ে পড়াবেন তুই তার আগের রাতে সে বিষয় বই থেকে রিডিং পড়ে/ধারণা নিয়ে যাবি, এতে স্যার যখন ক্লাসে পড়াবে তুই তখন সহজে স্যার এর পড়ার সাথে রিলেট করতে পারবি। টিপস টা আসলেই আমার অনেক কাজে দিয়েছিল।
ভ্রমণের বেলাতেও তাই হয়। আপনি যখন কোন একটা স্থান সম্পর্কে আগে জেনে যাবেন তাহলে ঐ স্থানের পোশাক থেকে শুরু করে ভাষা, খাবার ইত্যাদি সব সম্পর্কে আপনার একটা ধারণা হয়ে যাবে। এতে আপনি যখন ভ্রমণে যাবেন তখন খুব সহজেই বিষয় গুলোর সাথে রিলেট করতে পারবেন। ভ্রমণ হবে আনন্দময়।
ভ্রমণে বাচ্চাদের আপনার সাথে নিতে ভয় পাবেন না
ভ্রমণে গেলে আমরা বাচ্চাদের সাথে নিতে চাই না। আমরা ভাবি যে, বাচ্চাদের দেখাশোনা করতে গিয়ে ট্যুর টা ই না মাটি হয়ে যায়। কিছু লোক তাদের বাচ্চাদের সাথে ভ্রমণ করতে ভয় পায়, বিশেষ করে যদি তাদের বাচ্চারা বেশ ছোট হয়।
যদিও ছোট বাচ্চাদের বা এমনকি শিশুদের সাথে ভ্রমণ করা ক্লান্তিকর এবং এমনকি ভয়ঙ্করও হতে পারে, কিন্তু এটা করা ঠিক নয়। বাচ্চারা তো ছোট থেকে শিখবে। এদেরও প্রশান্তি ভালো লাগে। প্রকৃতপক্ষে, ভ্রমণ জ্ঞান বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং যদি একটি শিশুকে অল্প বয়স থেকে ভ্রমণ করানো হয়, তবে তারা সেই কোমল বয়স থেকেই সাংস্কৃতিক সচেতনতা বিকাশ করতে এবং এটি শিক্ষিত এবং সংবেদনশীল হয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হতে সাহায্য করবে।
আরও: কাছে ভ্রমণের জন্য ব্যাকপ্যাক এ কি কি নিবেন
ভ্যাকসিন নিন
করোনাভাইরাস থেকে মুক্তির জন্য ভ্যাকসিন নিন। যদিও ভ্যাকসিন নেয়া অনেক দেশে বাধ্যতামূলক। তবে আপনি একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আপনাকে ভ্যাকসিন নেয়া উচিৎ।
কিছু দেশে কঠোর ভ্রমণ নীতি রয়েছে এবং আপনি সঠিকভাবে টিকা না দেওয়া পর্যন্ত আপনাকে তাদের দেশে প্রবেশ করতে দেবে না। এর পিছনে যুক্তিটি সহজ – তারা এক দেশ থেকে অন্য দেশে রোগের বিস্তার রোধ করতে চায়।
আশাকরি বুঝতে পেরেছেন।
ভ্রমণের পূর্বে পরিচিত কাউকে আপনার গন্তব্য জানিয়ে রাখুন
ভ্রমণ এর সময় পরিচিত অথবা বাড়িতে কাউকে আপনার গন্তব্য সম্পর্কে জানিয়ে রাখুন। একাকী ভ্রমণ করার সময় এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বলাতো যায় না, কখন দুর্ঘটনা ঘটে যায় বা আপনাকে তাদের প্রয়োজন হয়ে পরে।
আরও: ভ্রমণ সঙ্গী কীভাবে নির্বাচন করবেন
ভ্রমণে যাওয়ার পূর্বে সঞ্চয় করুন
ভ্রমণে যাওয়ার পূর্বে সঞ্চয় করুন। এই “পূর্বে” মানে ভ্রমণের ঠিক আগের সময়ের কথা বলা হয় নি! ধরেন, আপনি প্ল্যান করেছেন সামনের ১/২ মাস পর ভ্রমণে যাবেন তাহলে এখন থেকেই ভ্রমণের জন্য নির্দিষ্ট করে কিছু টাকা সঞ্চয় করা শুরু করে দিন।
কম টাকা দিয়ে আপনি ভ্রমণ হয়তো করতে পারবেন কিন্তু মন ভরে নয়। কারন, ভ্রমণের জন্য টাকা প্রয়োজন। ভ্রমণে গিয়ে যদি টাকা নিয়ে হিসেব-নিকেশ শুরু করে দেন তাহলে মন ভরে আর ভ্রমণ হবে না। আশাকরি বুঝতে পেরেছেন।
তবে, আরও একটি টিপস হল: আপনি যখনই একটি ভ্রমণ শেষ করে আসবেন তখন থেকেই আপনি পরবর্তী ভ্রমণের জন্য সঞ্চয় শুরু করে দিতে পারেন।
Facebook: Wilep